নিজস্ব প্রতিবেদক:
শুরু হলো পবিত্র রমজানুল মোবারক। এই মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য নিয়ে এসেছে রহমত, মাগফিরাত, মুক্তি ও শান্তি-সম্প্রীতির অমিয় বার্তা। মানবজাতির ঐকান্তিক কল্যাণ ও মঙ্গল লাভের অপার সম্ভাবনা নিহিত রয়েছে এই বার্তায়। কারণ, এই মাসে করুণাময় প্রভু তার অফুরন্ত রহমত ও শান্তির বারিধারা বর্ষণ করেন। তার নেয়ামতের ভাণ্ডার খুলে দেন। অগণিত বান্দাকে মাফ করে দেন। মুক্তির সুসংবাদ পৌঁছে দেন মুমিনের দুয়ারে দুয়ারে। দীর্ঘ এগারো মাসে অন্তরে সৃষ্ট বিষাক্ত মরীচিকা দূর করতেই এসেছে রমজান।
সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষ আত্মশুদ্ধি ও পবিত্রতা অর্জন করে। চিরন্তন জীবনের অনন্ত সফলতার স্বর্ণশিখরে আরোহণ করে। এতে পশুত্ব নিস্তেজ হয়ে যায় এবং মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হয়।
রমজান মুমিন-জীবনের অনন্য প্রাপ্তি। রোজার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের বহুমুখী কল্যাণের সন্ধান দেন। মানুষের গতিপথ বিভ্রান্ত করার জন্য অভিশপ্ত শয়তান সব সময় পাঁয়তারা করতে থাকে। কিন্তু রমজানের চাঁদ উদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শয়তানকে বন্দি করে দেয়া হয়। তখন শয়তানের কুমন্ত্রণা দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না। রমজানে মানবতার প্রত্যাশিত ঠিকানা জান্নাতের দুয়ার খুলে দেয়া হয়। আর অভিশপ্ত জাহান্নামের দুয়ার দেয়া হয় বন্ধ করে। যারা জীবনের স্রোতধারা সঠিক পথে প্রবাহিত করতে চান, তাদের জন্য রমজান আশীর্বাদস্বরূপ।
পবিত্র রমজানের প্রতিটি মুহূর্তের মধ্যে এত বেশি বরকত লুকিয়ে আছে যে, এই মাসে করা নফল কাজগুলো ফরজ কাজের মর্যাদা পায় আর ফরজ কাজগুলো ৭০ গুণ অধিক মর্যাদা পায় (বায়হাকি)। রমজান মাস এলে আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, সৎপথে চলা সহজ হয়ে যায়, শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয় (বুখারি ও মুসলিম)। অন্যায় ও পাপকাজ থেকে দূরে থাকতে রোজা ঢালস্বরূপ। যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীত ও বর্তমানের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।
রমজান মুমিনের জন্য কাক্সিক্ষত সফলতা লাভের জোরালো হাতছানি। যারা পাপাচারের মাধ্যমে জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন, রমজান তাদের ক্ষান্ত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। পাপের খনিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বান্দাকেও এ মাসের বরকতে মাফ করে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন মহান রাব্বুল আলামিন। রমজানের প্রাপ্তি ও সুফল নিশ্চিত হওয়ার পূর্বশর্ত হলো, এ মাসের দাবি যথাযথভাবে আদায় করা। রমজানে পাপকাজ থেকে বিরত থাকা অতি সহজ। কারণ, মানুষের চিরশত্রু ইবলিশকে তখন শিকলবদ্ধ করে রাখা হয়। সে জন্য রমজানের বাঁকা চাঁদ পাপমুক্ত থাকার সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। আমাদের একটু সদিচ্ছাই পারে পাপমুক্ত জীবনের সূচনা করতে। সুতরাং এত বড় সুযোগ পেয়েও যারা তা কাজে লাগাতে পারে না, রাসূল (সা.) তাদের বড়ই দুর্ভাগা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের উচিত, অন্তত দুর্ভাগাদের তালিকা থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
সংবাদটি পঠিতঃ ২৫৬ বার
আরো খবর
ট্যাগ নিউজ
সর্বশেষ খবর