বিশেষ প্রতিবেদক, নব আলো
প্রকাশিতঃ ৩১ মার্চ ২০১৯ ১০:০৪:২৯ পূর্বাহ্ন
মসজিদে হামলাকারী ‘টারান্ট’জেলখানায় বাড়তি সুবিধা চাচ্ছে! 

নব আলো : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে নূর দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫০জন মানুষকে হত্যা করার দায়ে অভিযুক্ত ব্রেন্টন টারান্ট (২৮) জেলখানায় থেকেও নানা অভিযোগ করছেন। তিনি জেলের ভেতরে বিভিন্ন সযোগ সুবিধা চাচ্ছেন। তিনি সেখানে থেকে স্বজনদের সঙ্গে ও ফোনে কথা বলার সুযোগ চাচ্ছেন। তিনি চিকিৎসা সেবাসহ আরও নানা সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

নিউজিল্যান্ডের সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট স্টাফ এর বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা এ খবর জানিয়েছে। 

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫০জন মানুষকে হত্যা করার দায়ে অভিযুক্ত ব্রেন্টন টারান্টকে একটি হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, এরপর তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ তোলা হবে।

ব্রেন্টনকে পারেমোরেমোর অকল্যান্ড জেলখানা, যাকে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে কঠোর জেলখানাগুলোর একটি ভাবা হয়, সেখানে সবার থেকে আলাদা রাখা হয়েছে।

ব্রেন্টন জানিয়েছে যে তাকে কোন দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না, কোন ফোনও করতে দেয়া হচ্ছে না।

ঘটনার পরের শুক্রবারে হ্যাগলি পার্কে এক স্মরণসভায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন এবং অন্তত কুড়ি হাজার মানুষ নিহতদের স্মরণে সমবেত হয়েছিলেন।

হামলার পরদিন ১৬ই মার্চ ব্রেন্টনকে ক্রাইস্টচার্চে আদালতে হাজির করা হয়।

এরপরই তাকে অকল্যান্ডের ঐ জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

স্টাফ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ব্রেন্টন ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে, জেলখানায় সে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, বিশেষ করে ফোন এবং কোন পরিজনের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না সে।

নিউজিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী একজন বন্দি সপ্তাহে একজন বেসরকারি দর্শনার্থীর সঙ্গে অন্তত ৩০ মিনিট কথা বলতে পারবেন এবং সপ্তাহে একবার ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।

এছাড়া একজন বন্দি যথার্থ খাবার ও পানীয়, বিছানাপত্র, স্বাস্থ্যসেবা ও ব্যয়ামের সুবিধাদি পাবেন।

ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের একজন কর্মকর্তা স্টাফকে জানিয়েছেন, সবার থেকে আলাদা করে তাকে রাখা হয়েছে এবং তাকে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ফলে সে অনেক ন্যুনতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে সে অভিযোগ করেছে।

নিউজিল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বন্দিদের মানবতা, মর্যাদা এবং সম্মানের সঙ্গে থাকার অধিকার রয়েছে।

তবে, কর্তৃপক্ষ বিশেষ পরিস্থিতিতে কোন বন্দির জন্য এ নিয়মের অন্যথা করতে পারে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোন বন্দিকে যদি নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে আলাদা করে রাখা হয়, তাহলে তার ক্ষেত্রে অন্য যে কোন নিয়ম শিথিল হতে পারে।

জেলে কী অবস্থায় আছে ব্রেন্টন?
ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনের একজন মুখপাত্র নিউজিল্যান্ডের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যে ব্রেন্টন কোন গণমাধ্যম বা দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করতে পারে না।

দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিরাপত্তার কারণে তার সম্পর্কে কোন তথ্য বাইরে প্রকাশ করা যাবে না।

এদিকে, স্টাফ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে ব্রেন্টনের থাকার জায়গা থেকে এক কংক্রিট আঙিনায় যাওয়া যায়, যেখানে সে দিনে একবার একঘণ্টার জন্য যেতে পারে।

তবে সে সবকিছু নিয়ে অভিযোগ করতে থাকে।

এপ্রিলের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

ক্রাইস্টচার্চে পরবর্তী শুনানির দিনে তাকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।

নিউজিল্যান্ডের ক্ষত সারছে যেভাবে
ঐ হামলার ধাক্কা সামলাতে নিউজিল্যান্ড যে অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাকে সম্মান জানিয়েছে সারা বিশ্ব।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডান বলেছেন, আমরা হেইট বা ঘৃণা এবং ভীতির ঊর্ধ্বে নই। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা দ্রুত সেরে উঠবো।

ঐ ঘটনায় ৫০ জন মানুষ মারা গেছেন। এখনো ২২জন মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, এর মধ্যে চার বছর বয়সী একটি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা । 


প্রকাশকঃ- মোঃ সাইদুল ইসলাম রেজা

মিরপুর ১০ ,ঢাকা-১২১৬, ইমেইলঃ news.muktobani@gmail.com টেকনিকালঃ 01511 100004, নিউজ রুমঃ 01552 601805