
নব আলো : বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারের চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ না দিলে গ্রিনলাইনের বাস জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, “১০ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া না হলে ১১ তারিখ থেকে গ্রিনলাইন পরিবহনের কোনো বাসের টিকেট বিক্রি করা যাবে না। তাদের সব গাড়ি সিজ করা হবে।”
এ সময় আদালত বলেন, “সাধারণ মানুষকে হয়রানি করবেন না।”
এর আগে দুপুর ২টায় আদালতের নির্দেশে হাজির হন গ্রিনলাইন পরিবহনের ম্যানেজার আবদুস সাত্তার। তিনি আদালতে হাজির হয়ে বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত, আমার মালিক গত ২৯ মার্চ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছেন। ৯ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে। আমাদের যথাযথ সময় প্রদান করেন। আমার মালিক ফিরে এলে আমি টাকা পরিশোধ করতে বলব।’
এ সময় আদালত বলেন, ‘৯ এপ্রিল টাকা পরিশোধ করে ১০ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করবেন।’
এরপর আদালত বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারের চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে তা আজ আদালতে জানানোর কথা ছিল। কিন্তু গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারের চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, যত বড় বিজনেসম্যান হোক না কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে হয়ে যাননি। একটা সীমা থাকা দরকার। ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ না করলে প্রয়োজনে গ্রিনলাইন পরিবহনের সব গাড়ির চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সব গাড়ি সিজ করে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করে রাসেলকে টাকা দেওয়া হবে। রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ পরিশোধ করে আজ আদালতে তা জানানোর কথা ছিল।
শুনানির শুরুতে রিটের পক্ষের আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা বলেন, গ্রিনলাইন পরিবহনের কেউ কোনো যোগাযোগ করেননি, টাকাও দেননি। তাদের মালিককে সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশনা চান তিনি।
এ সময় গ্রিনলাইন পরিবহনের আইনজীবী অজিউল্লাহ আদালতকে বলেন, “আমি সব সময় তাদের আদালতের আদেশ জানিয়ে এসেছি।”
আদালত বলেন, এর মালিক কে? অজিউল্লাহ বলেন, মো. আলাউদ্দিন। তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন। আদালত জানতে চান, কোথায় আছেন এবং কবে আসবেন? অজিউল্লাহ বলেন, আমি জানার চেষ্টা করছি।
আদালত বলেন, ‘ব্যবসা তো বন্ধ নেই, ব্যবসা তো চলছে? ম্যানেজারকে ডাকেন। ম্যানেজারের কাছ থেকে পজিটিভ কিছু না পেলে আমরা গ্রিনলাইন পরিবহনের সব বাস সিজ করে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করব। আমরা সব স্টপ করে দেব। একটা সীমা থাকা দরকার। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে হয়ে যাননি।
হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় গ্রিনলাইন পরিবহনের ম্যানেজার আবদুস সাত্তারকে দুপুর ২টায় তলব করেন হাইকোর্ট। এরপর আদালত বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারের চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন।
আদালত বলেছেন, ‘১০ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া না হলে ১১ তারিখ থেকে গ্রিনলাইন পরিবহনের কোনো বাসের টিকেট বিক্রি করা যাবে না। তাদের সব গাড়ি সিজ করা হবে।’
এর আগে সকালে এ মামলার শুনানিকালে হাইকোর্ট জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণ না দিলে ওই পরিবহনের সব বাস জব্দ করা হবে। প্রয়োজনে সব বাস নিলামে তুলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
গত ৩১ মার্চ গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথাকাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তথ্যসূত্র : এনটিভি অনলাইন ।