আর্কাইভ | ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ০৫:৫৮:৪১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ ওয়ালটন-ডিআরইউ মিডিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০২৩ শুরু * বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে, তারিখ নির্ধারণ * জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। * গাজায় মানবিক বিপর্যয় চেয়ে চেয়ে দেখছে বিশ্ব * “শেখ হাসিনাতেই আস্থা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক * মানুষের কল্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো বিকল্প নেই - এমপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম * শিবগঞ্জ পৌরসভায় গণসংযোগ উত্তর কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নৈশভোজ করছেন এমপি প্রার্থী নজরুল * শিবগঞ্জে গণসংযোগ উত্তর কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নৈশভোজ করছেন এমপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম * শিবগঞ্জ পৌরসভায় সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে সৈয়দ নজরুল ইসলামের গণসংযোগ লিফলেট বিতরণ * আমি নিতে আসিনি আপনাদের দিতে এসেছি : এমপি প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম * আধুনিক স্মার্ট শিবগঞ্জ গড়তে চান-এমপি প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম * শিবগঞ্জে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে সৈয়দ নজরুল ইসলামের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ * মনোনয়ন পেলে নেত্রীকে শিবগঞ্জ আসনটি উপহার দিতে চাই- নজরুল ইসলাম * শিবগঞ্জ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম * আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল * ইসরায়েলকে ‘রক্ষায়’ যুক্তরাষ্ট্র কি মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
০৬ নভেম্বর ২০২৩
০৯:১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
আপডেটঃ
০৬ নভেম্বর ২০২৩
০৯:১৫:০২ পূর্বাহ্ন
                       

গাজায় মানবিক বিপর্যয় চেয়ে চেয়ে দেখছে বিশ্ব

ইসরায়েলের টানা হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২৯ অক্টোবর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। তিনি গাজায় ভয়ানক রক্তপাতের অবসানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের টানা হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২৯ অক্টোবর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। তিনি গাজায় ভয়ানক রক্তপাতের অবসানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।


নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু সফররত জাতিসংঘের এই প্রধান বলেন, গাজার পরিস্থিতি প্রতি ঘণ্টায় পরিবর্তন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনে প্রয়োজনীয় মানবিক যুদ্ধবিরতির বদলে ইসরায়েল তার সামরিক অভিযান জোরদার করেছে।

তিনি বলেন, সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। চোখের সামনে একটি মানবিক বিপর্যয় প্রত্যক্ষ করছে বিশ্ব।


এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান হামলায় ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির এই সংখ্যা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার জনই শিশু এবং ২ হাজারের বেশি নারী।

এই সময়ে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২২ হাজার  জন। অন্যদিকে, উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রাণহানি ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৫ হাজারের বেশি মানুষ।

গাজার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য উপত্যকাজুড়ে বিধ্বংসী বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইতিমধ্যে গাজায় ঢুকে স্থল অভিযান শুরু করেছে। রোববার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজায় স্থল অভিযানে আরও অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। গাজার বিভিন্ন এলাকায় তারা হামাসের সদস্যদের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।


গাজা শহর ঘিরে ফেলার দাবি ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বুরেজ শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) এই শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলার পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।


এছাড়া বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলেও জানানো হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে গাজার শরণার্থী শিবিরে তৃতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বুরেজ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গাজা সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বৃহস্পতিবার মধ্য গাজার এই শিবিরে আবাসিক ভবনে হামলা চালানো হলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু লোক আটকে থাকার কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা।


হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমি এবং আমার পরিবার বসে ছিলাম, হঠাৎ আমরা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। আমাদের চারপাশে সবকিছু যেন উড়ছিল। আমরা ধুলো আর ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি। ব্যাপক হামলা হয়েছে... এক সেকেন্ডের মধ্যেই যেন পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।’

ধ্বংসস্তূপের দিকে ইশারা করে তিনি বলেন, ‘ওটা আমার বাড়ি ছিল। এখন তা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি কি বলব, জানি না। আমরা অসহায়।’


আল জাজিরা বলছে, বুরেজ ক্যাম্পটি তুলনামূলকভাবে ছোট শরণার্থী শিবির যা গাজা উপত্যকার মাঝখানে অবস্থিত। ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর নিবন্ধিত প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থীর আবাসস্থল হচ্ছে এই শিবির।

মূলত গত বেশ কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল গাজার অভ্যন্তরে শরণার্থী শিবিরগুলোতে অসংখ্য হামলা চালিয়েছে। সেগুলোও আবার প্রায়শই এমন সব এলাকায় যা অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ কিছু এলাকা বলে পরিচিত।

ইসরায়েল বলেছে, সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করছে তারা। যদিও ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।


ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।


জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, এ ধরনের ‘নির্বিচার হামলা’ যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

হিরোশিমার চেয়েও বেশি বোমা গাজায়


অমানবীয় অত্যাচার প্রতিনিয়তই মনে করাচ্ছে পূর্বের কালো অধ্যায়। গাজার বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা বারবার স্মরণ করাচ্ছে হিরোশিমার পারমাণবিক বিস্ফোরণকে। নির্বিচারে অসহায়-নিরস্ত্র মানুষদের হত্যায় হিরোশিমার চেয়েও বেশি বোমা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে গাজায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোণঠাসা মুহূর্তে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে  ১৫ হাজার টন ওজনের এটম বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মুহূর্তে ঝলসে গিয়েছিল দুই শহরই। আজও সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে জাপান। ঠিক একই বর্বরতা গাজাতেও চালাচ্ছে ইসরাইল।  মাত্র ২৭ দিনে ২৫ হাজার টন বোমা ফেলেছে।  যা প্রায় দুটি পারমাণবিক বোমার সমান।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘ইউরো-মেডিটারেনিয়ান হিউম্যান রাইটস অবজারভেটরি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জাপানের হিরোশিমার আয়তন ৯০০ বর্গকিলোমিটার। অন্যদিকে গাজার আয়তন ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের বেশি নয়। অর্থাৎ গাজায় ফেলে দেওয়া বিস্ফোরকগুলোর শক্তি হিরোশিমার চেয়েও ভয়াবহ।  ইসরাইলের শক্তিশালী ধ্বংসাত্মক বোমা ১৫০ থেকে ১,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিবৃতি অনুযায়ী, শুধু গাজা শহরে দশ হাজারেরও বেশি বোমা ফেলা হয়েছে। নৃশংস হামলায় গাজা স্ট্রিপে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে সংস্থাটি।

এর মধ্যে রয়েছে ক্লাস্টার এবং ফসফরাস বোমা। গুরুতর এ বোমায় মানুষের শরীর মারাত্মভাবে পুড়ে যাচ্ছে। বোমায় আহত ব্যক্তিদের ত্বক গলে যায়। শরীরে অদ্ভুত ফোলাভাব এবং বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। অবশেষে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

ইউরো-মেড সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক নির্বিচার এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ আক্রমণগুলো যুদ্ধের আইন এবং মানবিক আইনকে লঙ্ঘন করে। সংস্থাটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের লক্ষ্যেও কাজ করছে তারা। তবে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার এ  ইতিহাস নতুন নয়। বহু আগের। ১৫ বছর ধরেই তারা ইসরাইলের হামলার শিকার হয়ে আসছে।

২০০৮ সালে হামাস যোদ্ধাদের হত্যায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। এক সপ্তাহ ধরে চলা সেই যুদ্ধে গাজায় বোমা বর্ষণের পাশাপাশি উপত্যকায় ঢুকে আগ্রাসনও চালায় ইসরাইলি বাহিনী। সেসময় অন্তত এক হাজার ফিলিস্তিনি ও ১২ ইসরাইলি নিহত হন। গাজার অসংখ্য বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

এরপর ২০১২ সালে টানা আট দিন গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। যুদ্ধে অন্তত ১৮০ জন প্রাণ হারান। ২০১৪-২০২১ সালে পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ও পবিত্র আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে ইসরাইলের বিধিনিষেধের জেরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়।

ইসরাইলি হামলায় সে যুদ্ধে দুই হাজার ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন। হতাহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক। ২০২১ সালে গাজায় বড় ধরনের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

 রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে যাওয়ায় ইসরাইল নিষেধাজ্ঞা দিলে সহিংসতা শুরু হয়। এতে গাজায় ২৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২০২২ সালে আবারও গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরাইল। এর জবাবে হামাসও পালটা হামলা চালায়। টানা তিন দিন চলা এ যুদ্ধে অন্তত ১৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

সংবাদটি পঠিতঃ ৬৬৫ বার


নির্বাহী সম্পাদকঃ এম ইমরান খান

প্রকাশকঃ আল-মামুন

মনাকষা,শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ইমেইলঃ news.muktobani@gmail.com
টেকনিকালঃ ০১৫১১১০০০০৪,
নিউজ রুমঃ ০১৭৫১৪৭৪৮৭৩

Design & Developed By IFTI IT